আধার, আজকের ডিজিটাল জমানায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, প্রায়শই ম্যানুয়াল কেওয়াইসি [KYC] ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হয়, যা
একাধিক ফটোকপি এবং সেল্ফ-অ্যাটেস্টেশনের সাথে জড়িত একটি কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া হতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি সহজ এবং দ্রুত
করতে, আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ডিজিটাল সনাক্তকরণের জন্য নিজে করার এবং ঝঞ্ঝাট-মুক্ত পদ্ধতি দিয়েছে।
অনলাইনে আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] সহ, ব্যক্তিরা সহজেই তাদের পরিচয়ের ফিজিকাল নথি এবং পেপারওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা দূর করে
ইলেক্ট্রনিক ভাবে নির্দিষ্ট করতে পারেন। এই ডিজিটাল ভেরিফিকেশন পদ্ধতি শুধুমাত্র আরও সুবিধাজনক তা-ই নয় বরং ব্যক্তি এবং
সংস্থা উভয়ের জন্যই মূল্যবান সময় বাঁচায়।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] নির্বাচন করার মাধ্যমে, ব্যক্তিরা একাধিক ফটোকপি জমা এবং ভেরিফাই করার পাশাপাশি প্রতিটি ডকুমেন্ট
স্ব-প্রত্যয়িত করার জটিল প্রক্রিয়া এড়াতে পারেন। এর পরিবর্তে, তারা ইনস্ট্যান্ট ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশানের মাধ্যমে নিরাপদ
এবং দক্ষভাবে নিজেদের আধার নম্বর দিতে পারেন।
নির্দিষ্ট করার জন্য এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি গতি, দক্ষতা এবং ব্যবহারের সুবিধার কারণে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এটি বিভিন্ন
কাজের ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশান প্রক্রিয়াকে সহজ করে, যেমন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, সিম কার্ড পাওয়া, সরকারী পরিষেবা এবং আরও
অনেক কিছু।
একজন ব্যক্তিকে আধার কেওয়াইসি [KYC] বুঝতে এবং ব্যবহার করতে সাহায্য করার জন্য, এই কম্প্রিহেন্সিভ গাইড আপনার সম্পূর্ণ
প্রক্রিয়াটি তুলে ধরে। এই গাইড ধাপে ধাপে নির্দেশ, মূল সুবিধা এবং প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলীর উত্তর দেবে।
আমাদের তথ্যমূলক ব্লগে কিভাবে আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ভেরিফিকেশান প্রক্রিয়াটি স্ট্রিমলাইন করা যায় তা জানুন।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] কি?
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] (ইলেকট্রনিক নো ইওর কাস্টোমার) হল ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া [UIDAI] দ্বারা ইস্যু
করা পরিচয় ভেরিফিকেশনের একটি ডিজিটাল পদ্ধতি যা আধার কার্ডে ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যক্তিকে তার পরিচয় প্রমাণ করতে এবং
সুবিধা প্রদানকারীদের সাথে সুরক্ষিত এবং সঠিকভাবে নিজের জনসংখ্যাগত এবং বায়োমেট্রিক তথ্য শেয়ার করতে সাহায্য করে।
ই-কেওয়াইসি [e-KYC] পোর্টালের সাথে, আধার ভেরিফিকেশান আবশ্যক। একজন ব্যক্তি তাদের আধার বিবরণ ইলেক্ট্রনিক ভাবে অ্যাক্সেস
করার জন্য ব্যাঙ্ক, টেলিকম অপারেটর বা সরকারী সংস্থা জাতীয় পরিষেবা প্রদানকারীদের অনুমোদিত করতে পারেন। এর ফলে ম্যানুয়াল
পেপারওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা দূর হয়, ত্রুটির সম্ভাবনা কমে এবং ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার গতি এবং সুবিধা বৃদ্ধি পায়।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] এবং আধার প্রমাণীকরণের মধ্যে পার্থক্য
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] এবং আধার অথেন্টিকেশন হল দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়া যাদের আধার ইকোসিস্টেমের মধ্যেই আলাদা উদ্দেশ্য ও
সুবিধে থাকে। এখানে দুটির মধ্যে মূল পার্থক্য দেওয়া হলো:
-
ডেটা শেয়ার করা:
ই-কেওয়াইসি [e-KYC]-এর সময়, ব্যক্তির ডেটা শেয়ার করার উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের সে নিজের
আধার রেকর্ড থেকে নির্দিষ্ট জনসংখ্যাগত তথ্য অ্যাক্সেস করার অনুমতি দিতে পারে। আধার কেওয়াইসি [KYC] প্রমাণের মাধ্যমে
ইউআইডিএআই [UIDAI] ডেটাবেসে স্টোর করা তথ্যের সাথে তাদের বায়োমেট্রিক্স (ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা iris স্ক্যান) বা ওটিপি
[OTP] যাচাই করার মাধ্যমে ব্যক্তির পরিচয় নির্দিষ্ট করা হয়। এর মধ্যে প্রমাণীকরণের প্রয়োজনীয়তা বাদে অন্য ডেটা
শেয়ারিং প্রয়োজন নেই (সফল বা অসফল)। -
সম্মতির প্রয়োজনীয়তা:
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC]-এর জন্য ব্যক্তিটিকে তাদের জনসংখ্যাগত তথ্য, পরিষেবা প্রদানকারীর সাথে শেয়ার করার জন্য
স্পষ্ট সম্মতি প্রয়োজন। ব্যক্তিটি প্রতিটি নির্দিষ্ট ট্রানজ্যাকশান বা পরিষেবার জন্য সম্মতি দিয়ে থাকে।
ট্র্যাডিশনাল আধার কেওয়াইসি [KYC]-এর জন্য ব্যক্তির সম্মতি প্রয়োজন, কিন্তু এক্ষেত্রে মূলত একটি নির্দিষ্ট
ট্রানজ্যাকশান বা সার্ভিসের অনুরোধের সময় তাদের পরিচয় ভেরিফাই করা হয়। -
প্রক্রিয়ার প্রকৃতি:
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] একবারই করার একটি প্রক্রিয়া, যেখানে কোনও ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে তাদের আধার
বিবরণ আনতে এবং ব্যবহার করার জন্য পরিষেবা প্রদানকারীকে অনুমোদিত করে। আধার প্রমাণীকরণ হল ব্যক্তির পরিচয় যাচাই
করার জন্য প্রতিটি ট্রানজ্যাকশান বা পরিষেবা অনুরোধের সময় সে মুহূর্তে করার একটি প্রক্রিয়া। প্রমাণীকরণ সম্পর্কিত
কোনও তথ্য পরিষেবা প্রদানকারীর কাছে সংরক্ষিত নেই।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ভেরিফিকেশন কিভাবে সম্পূর্ণ করবেন?
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ভেরিফিকেশান অনলাইন বা অফলাইনে করা যেতে পারে, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করার জন্য কোনও কাগজের
প্রয়োজন নেই।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] অনলাইন পদ্ধতি:
- বায়োমেট্রিক প্রমাণীকরণ: পরিষেবা প্রদানকারীকে আপনার আধার কার্ড দিন, যিনি বায়োমেট্রিক স্ক্যানার
ব্যবহার করে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা রেটিনাল ছবি ক্যাপচার করবেন। ইউআইডিএআই [UIDAI] আপনার পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য
তাদের ডেটাবেসে থাকা ডেটার সাথে এই ইনপুটটি যাচাই করবে। - মোবাইল ওটিপি [OTP] প্রমাণীকরণ: পরিষেবা প্রদানকারীকে আপনার আধার কার্ড দিন, তিনি ওটিপি
[OTP]-ভিত্তিক প্রমাণীকরণের ব্যবস্থা করবেন। আপনি আপনার রেজিস্টার করা মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি [OTP] পাবেন, যা আপনি
প্রদত্ত ডিভাইসে এন্টার করবেন। তারপর ইউআইডিএআই [UIDAI] পরিষেবা প্রদানকারীর সাথে আপনার বিবরণ শেয়ার করবে।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] অফলাইন পদ্ধতি:
- কিউআর [QR] কোড স্ক্যান করা: পরিষেবা প্রদানকারীরা ইউআইডিএআই [UIDAI] ডেটাবেস অ্যাক্সেস না করেই
আপনার আধার কার্ডের কিউআর [QR] কোড মোবাইল স্ক্যানার ব্যবহার করে স্ক্যান করে, অফলাইন কেওয়াইসি [KYC] ভেরিফিকেশানের জন্য
ডেমোগ্রাফিক তথ্য পেতে পারেন। - পেপারলেস অফলাইন ই-কেওয়াইসি [e-KYC]: অফিশিয়াল ইউআইডিএআই [UIDAI] পোর্টালে যান এবং একটি ওটিপি
[OTP]-র জন্য নিরাপত্তা কোডের সাথে আপনার ইউআইডি [UID] বা ভিআইডি [VID] লিখুন। আপনার বিবরণ সহ আধার এক্সএমএল [XML] ফাইল
ডাউনলোড করুন এবং পরিষেবা প্রদানকারীকে এটি দিন। ফাইলের মেশিন-দিয়ে-পড়ার যোগ্য বিবরণ ব্যবহার করে তারা আপনার পরিচয়
ভেরিফাই করবে।
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC]-এর সুবিধাগুলি কী কী?
আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] কাগজহীন এবং সময় বাঁচানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে:
- ভেরিফাই করা তথ্য: ই-কেওয়াইসি [e-KYC] এর মাধ্যমে ইউআইডিএআই [UIDAI] এর ডেটাবেস থেকে পাওয়া তথ্য
ইতিমধ্যেই ভেরিফাই করা হয়েছে, ফলে বারবার প্রমাণীকরণের প্রয়োজনীয়তা নেই। - সম্মতি-ভিত্তিক: আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] সম্মতি-ভিত্তিক পদ্ধতিতে কাজ করে। আপনার বিবরণ,
বায়োমেট্রিক বা ওতিপি [OTP]-র মাধ্যমে আপনার স্পষ্ট স্বীকৃতি প্রদান করার পরই অনুরোধকারী পার্টির সাথে শেয়ার করা হয়। - উন্নত নিরাপত্তা: আপনার ব্যক্তিগত বিবরণ সুরক্ষিত থাকে, কারণ ইউআইডিএআই [UIDAI]
শুধুমাত্র নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান এবং অনুমোদিত এজেন্টদের আধার কেওয়াইসি [KYC] অনলাইন ভেরিফিকেশান সুবিধা নেবার অনুমতি
দেয়। পরিষেবা প্রদানকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক স্ক্যানারও যাচাই করা হয়, যা নিরাপত্তার অতিরিক্ত স্তর যোগ
করে। - সুরক্ষিত ডকুমেন্ট শেয়ারিং: ই-কেওয়াইসি [e-KYC] প্রক্রিয়ার সময় শেয়ার করা ডিজিটাল ডকুমেন্ট একটি
সুরক্ষিত চ্যানেলের মাধ্যমে ট্রান্সমিট করা হয়, অবৈধ প্রতিলিপির ঝুঁকি বা অননুমোদিত ব্যবহারের ঝুঁকি কমায়।
আপনার আধার কেওয়াইসি [KYC]-এর পরিস্থিতি কীভাবে যাচাই করবেন?
যদি আপনি আপনার আধার কেওয়াইসি [KYC]–এর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত না হন, তাহলে তা ভেরিফাই করার জন্য এই ধাপগুলি অনুসরণ
করুন:
- কেওয়াইসি [KYC] রেজিস্ট্রেশন এজেন্সি (KRA)-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- আপনার পারমানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর (PAN) তথ্য সেখানে দিন।
- আপনি আপনার কেওয়াইসি [KYC] স্বীকৃতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ভাবেই নিশ্চিতকরণ পাবেন। যদি আপনি স্বীকৃত না হন, তাহলে আপনি
আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশান ব্যবহার করে প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করার জন্য এগিয়ে যেতে পারেন।
কোন সংস্থাগুলি আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ব্যবহার করে?
বিভিন্ন সংস্থায় গ্রাহক যাচাই করার জন্য আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন
সেক্টর রয়েছে যারা এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে:
- ব্যাঙ্ক এবং মিউচুয়াল ফান্ড হাউস
- রেলওয়ে
- ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট
- স্টকব্রোকার
- স্টক এক্সচেঞ্জ
- কেওয়াইসি [KYC] রেজিস্ট্রেশন এজেন্সিগুলি
- এলপিজি [LPG] পরিষেবা প্রদানকারী
উপসংহার
অনলাইনে আধার ই-কেওয়াইসি [e-KYC] ভেরিফিকেশান ব্যক্তির পরিচয় এবং ব্যক্তিগত তথ্য প্রমাণের জন্য একটি সুবিধাজনক এবং
সুরক্ষিত পদ্ধতি। ইউআইডিএআই [UIDAI] পোর্টালের মাধ্যমে প্রদত্ত ধাপ-অনুযায়ী প্রক্রিয়াটি চলে, ইউজাররা সহজেই তাদের আধার
বিবরণ অনলাইনে ভেরিফাই করতে পারেন।